ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত - ডায়রিয়ার লক্ষণ
প্রিয় পাঠক বৃন্দ ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত এবং ডায়রিয়ার লক্ষণ কি সে
সম্পর্কে আপনি নিশ্চয়ই জানতে চাচ্ছেন? কেননা ডায়রিয়া আমাদের যেকোনো সময়ই হতে
পারে তাই আমাদের সতর্কতার জন্য ডারিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত এবং ডায়রিয়ার
লক্ষণ এই দুটি বিষয় সম্পর্কে সকলের জেনে রাখা উচিত তাহলে আপনারাও ডায়রিয়ায়
আক্রান্ত হলে ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত সে বিষয়টি জেনে রাখতে পারবেন।
তাই আপনি যদি আমাদের এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়েন
তাহলে আপনিও জানতে পারবেন ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত এবং ডায়রিয়ার লক্ষণ
কি সে সম্পর্কে। তাহলে চলেন বন্ধুরা আর কথা না বেরিয়ে ঝটপট করে জেনে নেওয়া যাক
ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত এবং ডায়রিয়ার লক্ষণ কি?
পোস্ট সূচিপত্রঃডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত - ডায়রিয়ার লক্ষণ
ভূমিকা:ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত - ডায়রিয়ার লক্ষণ
ডায়রিয়া একটি পানি বাহিত রোগ। তাই ডায়রিয়ার মাধ্যমে শরীরের অংশ থেকে পানি কমে
যায় এবং পানির ঘাটতি দেখা দেয়। তাই ডায়রিয়া হলে মানুষ অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে
পড়ে আর এই ডায়রিয়া থেকে আমাদের সকলের সতর্কতা থাকা প্রয়োজন। তাই আজ আমরা
আপনাদের সাথে শেয়ার করব ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত, ডায়রিয়ার লক্ষণ,
শিশুদের ডায়রিয়া হওয়ার কারণ, শিশুর পাতলা পায়খানা বন্ধ করার ঘরোয়া উপায়,
ডায়রিয়া প্রতিরোধ ও প্রতিকার।
আরো পড়ুনঃ
রক্ত শূন্যতার লক্ষণ কি
ডায়রিয়া থেকে মুক্তির উপায় এ সকল বিষয়গুলো আমরা আজকের এই আর্টিকেলের মধ্যে
আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব তাই আপনি যদি এই সমস্ত বিষয়গুলো জানতে চান তাহলে
আপনাকে এই আর্টিকেল দিয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত স্টেপ বাই স্টেপ মনোযোগ সহকারে
পড়তে হবে তাই চলুন বন্ধুরা আর কথা না বাড়িয়ে এবারে ডায়রিয়া হলে কি করা উচিত
সে সকল সম্পর্কিত বিষয়গুলো জেনে নেওয়া যাক।
শিশুর পাতলা পায়খানা বন্ধ করার ঘরোয়া উপায়
শিশুদের পাতলা পায়খানা হলে শরীর থেকে অনেক পানি বেরিয়ে আসে তাই সেই পানির ঘাটতি
পূরণ করতে হলে প্রচুর পরিমাণে পানি জাতীয় খাবার তরল খাবার খেতে হবে। যেমন
স্যালাইন, জুস, ডাবের পানি ইত্যাদি সহজে কোন তরল খাবার। তবে শুধু তরল খাবার
খাওয়ালে কি শরীরের শক্তি চাহিদা পূরণ হবে সেই কারণে তরল খাবারের পাশাপাশি অর্ধ
তরল খাবার বা সুষম খাবারও খাওয়াতে হবে শিশুকে।
শিশুর শক্তি বৃদ্ধির জন্য শিশুকে সঠিকভাবে খাদ্য গ্রহণ করানোটা সবচেয়ে বেশি
জরুরী। তাকে নরম সহজপাচ্য খাবার দিতে হবে যেমন খিচুড়ি। ডাইরিয়া আক্রান্ত শিশুর
সঠিক খাদ্য গ্রহণ চালিয়ে যাওয়াটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। শিশু যদি খাবার
খাওয়া ছেড়ে দেয় তাহলে তার শরীরের আরো অবনতি দেখা দিতে পারে। ডালের পানি, দধি,
কলা, মুরগির মাংস ইত্যাদি খাবার খাওয়াতে হবে।
এছাড়াও শিশুকে প্রচুর পরিমাণে তরল পদার্থ খাওয়াতে হবে যেমন লেবুর শরবত, ভাতের
মাড়,ডাবের পানি, ঘরে তৈরি লাচ্ছি ইত্যাদি খাওয়াতে হবে। কিছু যদি বুকের দুধ খেয়ে
থাকে তাহলে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা যাবে না। নিয়মিত শিশুকে বুকের
দুধ খাওয়াতে হবে এতে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পাবে শিশু তার পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি
পাবে মায়ের থেকে। শিশুর পর্যাপ্ত পরিমাণে যত্ন নিতে হবে তাড়াতাড়ি যেন সে সেরে
উঠে।
শিশুদের ডায়রিয়া হওয়ার কারণ
শিশুদের যে সকল কারণে ডায়রিয়া হয়ে থাকে আজকে সেই সম্বন্ধে আপনাদের সাথে আলোচনা
করব। যারা অনেকেই জানেনা যে শিশুদের ডায়রিয়া হওয়ার কারণ কি তারা আমাদের
আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন। তাহলে আপনারাও জানতে পারবেন শিশুদের
ডায়রিয়া হওয়ার কারণ কি।
- শিশুদেরকে ময়লা ও জীবাণুযুক্ত পরিবেশে রাখা এবং শিশুদের খাবাররে তার ব্যবস্থা না থাকার কারণে ও ডায়রিয়া হয়ে থাকে।
- পেটে জীবাণুর আক্রমণ বা ইনফেকশন হওয়া। এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কয়েক দিনের মাঝে সেরে যায়। এটি হয়ে থাকে জীবাণুর কারণে।
- নরোভাইরাস নামের একটি ভাইরাসের আক্রমণের কারণেও হয়ে থাকে।
- ফুড পয়েজিং বা খাদ্য বিষক্রিয়ার কারনেও পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া হয়ে থাকে।
- ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যে কোনো ওষুধের সাথে দেওয়া নির্দেশিকা পড়ে দেখে খাবেন না হলেও হতে পারে ডায়রিয়া।
- নির্দিষ্ট কোন খাবারে এলার্জি থাকলে কোন খাবার সহ্য না হলে খেলেও ডায়রিয়া হয়ে থাকে।
ডায়রিয়া থেকে মুক্তির উপায়
যখন কোনো শিশু বা কোন ব্যক্তির ডায়রিয়া হয়ে থাকে তখন তার সবচেয়ে বেশি
প্রয়োজন হয় পানির। কারণ ডায়রিয়া হওয়ার ফলে শরীর থেকে পানি শূন্য হয়ে যাওয়া
সম্ভাবনা বেশি হয়। শরীলে যে পানির ঘাটতি দেখা দেয় সেটা পূরণ করাই হচ্ছে
ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়। শরীরে পাড়ি শূন্যতা দেখা দেয় এবং শরীরের
পুষ্টির অভাব ও দেখা দেয়।
শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে যার ফলে সহজে ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না।
আইডিয়া থেকে মুক্তি পেতে হলে পানি শূন্যতা দূর করতে হবে যার জন্য খাবার
স্যালাইন, ডাবের পানি, ভাতের মার খেতে হবে। প্রচুর পরিমাণে তরল ও অর্ধ তরল খাবার
খেতে হবে। পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। সুষম খাদ্য খাবার তালিকায়
রাখতে হবে নরম করে ডায়রিয়া ব্যক্তিকে ছেড়ে তুলতে হলে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার
খাওয়াতেই হবে।
আরো পড়ুনঃ
ডেঙ্গু জ্বর হলে কি করণীয় জেনে নিন
পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে হবে। খাবারে যেন কোন রকমের জীবাণুযুক্ত না হয় সেদিকে
খেয়াল রাখতে হবে। দূষিত পরিবেশ এবং দূষিত খাবারের কারণে বেশিরভাগ সময়ে
ডায়রিয়া হয়ে থাকে । তাই সব সময় আশেপাশের পরিবেশ এবং খাবার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন
ভাবে তৈরি করতে হবে। তাহলে এই ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে।
ডায়রিয়ার লক্ষণ
ডায়রিয়া যে হয়েছে এই বিষয়টি আমরা অনেকেই বুঝতে পারিনা। কিন্তু ডায়রিয়া
হওয়ারও কিছু লক্ষণ রয়েছে যার ফলে ডায়রিয়া হয়ে থাকে। এই লক্ষণ সম্পর্কে আজকে
আপনাদের জানাবো।
- পেটে খিচুনি বা ব্যথা অনুভব হওয়া
- পেট ফুলে যাওয়া
- বমি বমি ভাব ও বমিও হতে পারে।
- জ্বর আসা এবং শরীর গরম থাকা
- তরল জলের মত মল বের হওয়া এবং কখনো কখনো ফেনা সৃষ্টি হওয়া।
- মল আঁশটে দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে থাকা।
- মলে অনেক সময় রক্ত দেখা দিতে পারে।
এই সকল লক্ষণ দেখা দিলে বুঝতে হবে যে আপনার ডায়রিয়া হয়েছে। যদি বেশি সমস্যা
হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নিয়ে ওষুধ সেবন করতে হবে। সবসময়
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকতে হবে এবং জীবাণুমুক্ত খাবার খেতে হবে ।
ডায়রিয়া প্রতিরোধ ও প্রতিকার
ডায়রিয়া প্রতিরোধ:
ডায়রিয়া প্রতিরোধ করার জন্য সর্বপ্রথম ডায়রিয়া হলে আগে পানি শূন্যতা দূর করতে
হবে। ডায়রিয়া প্রতিরোধ করার জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ময়লা ও
জীবাণুযুক্ত পরিবেশে সব সময় ডায়রিয়া হয়ে থাকে। ডায়রিয়া হলে বুঝতে হবে যে
আশেপাশের পরিবেশ এবং খাবারের মধ্যে কোন সমস্যা ছিল। ফুড পয়েজিং এর মাধ্যমেও
ডায়রিয়া হয়ে থাকে। তাই খাওয়ার সময় এবং খাবার তৈরি সময় অবশ্যই পরিষ্কার পাবে
তৈরি করতে হবে।
আরো পড়ুনঃ ধাতু ক্ষয় হলে কি করনীয়
ডায়রিয়া প্রতিরোধ করতে হলে বাড়িতে সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। যে সকল পাথরের
রান্না করা হয় সে সকল পাত্র সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। খাবার তৈরি
করার সময় খাবার কে ভালোভাবে পরিষ্কার করে রান্না করতে হবে। খাবারে অনেক সময়
নানা রকমের জীবাণু লেগে থাকে যা পরিষ্কার না হওয়ার ফলে রান্নার পরে আরো
বিষক্রিয়া হয়ে যায় এবং ফুডপয়েজিং দেখা দেয়। সুস্থ থাকতে হলে পরিষ্কার
পরিচ্ছন্ন পরিবেশ রাখতে হবে তবেই সকল প্রকার অসুখ দূরে থাকবে।
ডায়রিয়া প্রতিকার:
যে ডায়রিয়া রোগের প্রতিকার ডায়রিয়ার প্রতিকার করার জন্য রোগীর আশেপাশের সকল
স্থান পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। মূলত দূষিত পরিবেশ এবং জীবাণুযুক্ত খাবার
খাওয়ার ফলে হয়ে থাকে। তাই প্রতিকার করতে হলে সর্বপ্রথম জীবাণুমুক্ত পরিবেশ করতে
হবে। খাদ্য রান্নার সময় ভালোভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রান্না করতে হবে।
আশেপাশের যত ময়লা পরিবেশ রয়েছে সকল জায়গা কে পরিষ্কার করে রাখতে হবে। শিশুদের
বেশিরভাগ ময়লা জায়গায় থাকার ফলে ডায়রিয়া হয়। এজন্য তাদেরকে সবসময় পরিষ্কার
পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। শিশুদের খাবার দেওয়ার সময় যথেষ্ট পরিমাণে মনোযোগী হতে হবে
যেন তাদের খাবারে কোন ফুড পয়েজিং না হয়। শিশুদের খাদ্য গ্রহণের সময় এবং খাবার
হজম হচ্ছে কিনা সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। সকল খাবার খেলে পেটের সমস্যা হবে সে
সকল খাবার না খাওয়াই ভালো।
ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত
মূলত অপরিষ্কার পরিবেশে থাকা ও জীবনে যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে ডায়রিয়া হয়ে
থাকে। দূষিত পানি পানের ফলেও ডায়রিয়া হয়ে থাকে। ডায়রিয়া হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে
তরল খাবার ও স্যালাইন খাওয়াতে হবে। ডায়রিয়ার সাথে যদি রক্ত বের হয় রোগীকে
দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে। ডায়রিয়া হলে আপনারা এই
ওষুধগুলো খেতে পারেন যেমন : লপেরামাইড, কোডিন- জাতীয় ঔষধ।
আরো পড়ুনঃ
দাঁতের পোকা দূর করার উপায়
আরো খেতে পারেন সিপ্রোফ্লক্সাসিন বা অ্যাজিথ্রোমাইসিন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক খেতে
পারেন। আবার ফ্লাজিল বা মেট্রোনিডাজল খেয়ে থাকে। ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে পানি
বের হয়ে যায় এইজন্য ডায়রিয়া রোগীকে বেশি বেশি তরল খাবার ডাবের পানি,
স্যালাইন, লেবু শরবত, ভাতের মাড় ইত্যাদি তরল জাতীয় খাবার খেতে দিতে হবে বেশি।
রোগীতে শুধু তরল খাবার দিলেই হবে না অর্ধ তরল ও একটু শক্ত জাতীয় খাবারও খেতে
দিতে হবে। না হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি পাবে না তখন আরো রোগী দুর্বল হয়ে
যাবে। ডায়রিয়া হলে রোগীকে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। রোগীর খাবার ও
যেন জীবাণুমুক্ত হয় সেদিকেও নজর রাখতে হবে। পরিষ্কার পরিবেশে থাকলে দ্রুতই রোগী
সুস্থ হয়ে যাবে।
শেষ কথা: ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত এবং ডায়রিয়ার লক্ষণ
প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনি এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনিদের সহকারে
পড়ে আপনিও জানতে পারছেন ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ খাওয়া উচিত এবং ডায়রিয়ার লক্ষণ
সম্পর্কে। এখন নিশ্চয়ই এই আর্টিকেলটি আপনার অনেক উপকারে আসবে। এতক্ষণ সময় ধরে
আমাদের সঙ্গেই থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
যদি আপনার এই আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু এবং আত্মীয়দের
সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না কেন নয় তারা এই পোস্ট পড়ে ডায়রিয়া হলে কি ওষুধ
খাওয়া উচিত সম্পর্কে জেনে অনেক উপকার ও উপকৃত হবে। তাহলে প্রিয় পাঠাক বৃন্দ কথা
আজ এ পর্যন্তই আবারো কথা হবে অন্য কোন বিষয়ে অন্য কোন টপিক নিয়ে এ পর্যন্ত সবাই
ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ।
আলোড়ন আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url